
মহাত্মা গান্ধীর জন্মের স্বার্ধ শতবর্ষ হয়ে গেছে, কিন্তু বহু মানুষের মন থেকেই তো সততা আর অহিংসা খোয়া গেছে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সত্য আর অহিংসার প্রতীক ভগবান বুদ্ধের মুর্তি, যাতে ওনার বিশেষ অংশ আছে, তা উড়িশ্যার জাজপুরে বালিচন্দ্রপুর গ্রামের এক বাড়ীর সিংহাসন থেকে চুরি
যেতে বসেছে।
কিশোরী রাই, তার বাবা মা ও মাসী নীলা চলেছে উড়িষ্যার সেই বিয়ে বাড়ীতে। হর্ষ রাইদের ভাড়াটিয়া, ওরই বিয়ে ওদের দেশের বাড়ী জাজপুরের বালীচন্দ্রপুরে। ওখানকার লালিতগিরিতে সত্তরের দশকে খনন কার্য চলার সময় বুদ্ধদেবের অস্থি দন্ত আর মহাস্তুপ উদ্ধার হয়। হর্ষর জ্যাঠামশায় প্রাণতোষ ওখানকার কর্মী ছিলেন। তিনি অস্থি ও দন্ত মিউজিয়ামে জমা দেন। কিন্তু পরে আর একটি দন্ত উদ্ধার হলে সেটিকে লুকিয়ে বাড়ী নিয়ে আসেন। একটি ছোট বুদ্ধ মূর্তি বানিয়ে তার ভেতর সেটাকে রেখে ভক্তি করে পূজা করেন। তার ভাই বদ্রিকাও ভক্ত। কিন্তু প্রাণতোষের ছেলে আগের বছর দন্ত সমেত মূর্তিটি চুরি করে বেচতে যায় ও আশ্চর্যজনক ভাবে বেচার আগেই খুন হয়ে যায়। এবার বদ্রিকার ছেলে হর্ষ তার বিয়ের খরচের জন্য ওটা আবার বেচতে চাইছে। তার কলকাতার বন্ধু বাবুদা হর্ষর বাবা ও জ্যাঠামশাইকে ধমকে গেছে। গাড়ীতে যেতে যেতে রাইরা জানতে পারে আগের রাতে মূর্তিটা খোয়া গেছে, জ্যাঠামশাইকে মারা হয়েছে। তবে মূর্তিটা সস্কবত দুষ্কৃতিরা পায়নি কারণ সিন্দুকে একটা কাগজে ধাঁধাঁ লেখাছিল, যা বদ্রিকা পুলিশকে দেন। হয়তো প্রাণতোষ মূর্তিটা সরিয়ে রেখেছিল আর তার সন্ধানটা ধাঁধাঁয় লিখে রেখেছিলেন। রাইএর গোয়েন্দাগিরির শখ, তার মাসী নীলারও তাই। ঘটনা চক্রে ধাঁধাঁটা ওরা জানতে পারে আর তদন্ত শুরু করে। রাইএর ঠাকুমাও কলকাতা থেকে ওদের বুদ্ধি দেয়। ধাঁধাঁর সূত্র ধরে রত্নগিরি, উদয়গিরিতে ওরা যায় ও আরো সূত্র পায়। ওরা যখন অনুমান করে এক প্রচীন কূয়োতে ওই মূর্তি আছে তখনই সেই রাতে ওই কুয়োয় হর্ষর বাবুদা খুন হয়ে যায় যাকে প্রধান সন্দেহ ভাজন বলে মনে হয়েছিল। তাকে আসলে ফাঁসানো হয়। পরেরদিন মন্দিরে বিয়ের সময় রাই আসল অপরাধীর সন্ধান পায় ও ফোনে রেকর্ড করে নেয়, কিন্তু তার পরেই সে কিডন্যাপ হয়ে যায়। গ্রামের মেয়ে তোজো সেটা দেখতে পায় আর তার থেকে সূত্র পেয়ে রাইকে শেষপর্যন্ত বাঁচায় কার্তিক কুমার নামের এক গোয়েন্দা যাকে আরো সন্দেহভাজনদের একজন বলে মনে হয়েছিল। রাই-এর সাহায্যে সে প্রধান অপরাধীকে গ্রেফতার করে। তবে কুয়োয় নকল মূর্তি ছিল। রাই ধাঁধার আরেক সূত্র ধরে, নীলার একটা কথা থেকে, আসল মূর্তি ও আসল দন্ত উদ্ধার করে। সততার প্রতীক বুদ্ধদেবকে আবার ঘরের সিংহাসনে বসানো হয়। কিন্তু বাপুজীর জন্মের দেড়শো বছর পরেও সবার মনের সিংহাসনে কি বসানো যায় না!

কাহিনী, চিত্রনাট্য, গীতরচনা, প্রযোজনা, পরিচালনা: সুদীপ্ত ব্যানার্জ্জী
চিত্ৰগ্ৰহণ :শ্যামল ব্যানার্জী।
অভিনয়ে
: অতনু দাশগুপ্ত ,বিশ্বজিত চক্রবর্তী কল্যানী মন্ডল
ও অন্যান্য