
৭ ডিসেম্বর ২০২৫। কলকাতার নাট্যপ্রেমী মহলের জন্য দিনটি এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত হয়ে রইল। পশ্চিমবঙ্গ নাট্য আকাদেমি আয়োজিত পঞ্চবিংশতি নাট্যমেলা— ‘নাট্যমেলা ২৫’ —এর শুভ উদ্বোধন হয়ে গেল রবীন্দ্র সদনের মনোমুগ্ধকর পরিবেশে। ‘রজত জয়ন্তী নাট্যমেলা’, ‘ভালোবাসার নাট্যমেলা’, ‘সকলের নাট্যমেলা’— এই তিন স্লোগানকে সামনে রেখে রাজ্যের নাট্যজগতে উৎসবমুখর আবহ তৈরি হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মাননীয় দু’জন মন্ত্রী— সাংস্কৃতিক দপ্তরের মন্ত্রী শ্রী ব্রাত্য বসু এবং ক্রীড়া ও যুব কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী শ্রী অরূপ বিশ্বাস। তাঁদের উপস্থিতিতে নাট্যমেলার সূচনা যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।
নাট্যমেলার উদ্বোধনের পরই শিল্পাঙ্গনে বাড়তি মহিমা যোগ করে গগনেন্দ্র শিল্প প্রদর্শনশালায় কিংবদন্তী অভিনেত্রী তৃপ্তি মিত্রের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে নির্মিত প্রদর্শনী ‘অপরাজিতা’—র পর্দা ওঠা। বাংলা নাটকের ইতিহাসে তৃপ্তি মিত্রের অবদান স্মরণে প্রদর্শনীটি হয়ে উঠেছে এক শিল্প-ঐতিহ্যের দলিল।
এই স্মরণীয় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ নাট্য আকাদেমির মাননীয় সভাপতি শ্রী দেবশংকর হালদার এবং মাননীয় সচিব শ্রী শান্তনু চক্রবর্তী। পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন আকাদেমির উপদেষ্টা পরিষদের মাননীয় সদস্যবৃন্দ—
শ্রী পরিতোষ সাহা, শ্রী বিজয় মুখোপাধ্যায়, শ্রী জয়েশ ল’, শ্রী সুরজিৎ সিনহা, শ্রী রাকেশ ঘোষ, শ্রী ইন্দ্রজিৎ চক্রবর্তী, শ্রী অতনু সরকার, শ্রী দেবাশিস রায়, শ্রী অভি চক্রবর্তী, শ্রী জয়দীপ ভৌমিক ও শ্রী অজিত রায়।

উদ্বোধনী মঞ্চে বক্তৃতায় মন্ত্রী ব্রাত্য বসু বাংলা থিয়েটারের ঐতিহ্য, আগামীর পথচলা এবং তৃপ্তি মিত্রের অভিনয়ঋদ্ধ জীবনকে বিশেষভাবে স্মরণ করেন। তিনি জানান, “নাট্যকলা মানুষের অস্তিত্বকে আলোকিত করে। তৃপ্তি মিত্রের মতো শিল্পীর জন্মশতবর্ষ আমাদের এক বিশেষ উপলক্ষ।”
নাট্যমেলার রজতজয়ন্তী বর্ষে এই দ্বিগুণ উদ্যাপন— নাট্যের উৎসব এবং তৃপ্তি মিত্রের স্মৃতিকে প্রণাম—কলকাতার সাংস্কৃতিক পরিসরে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। আগামী দিনগুলোতে একাধিক নাট্যসংস্থা, শিল্পী, নবীন-প্রবীণ দল অংশ নেবে নাট্যমেলা ২৫–এ, যার মাধ্যমে দর্শক দেখতে পাবেন বাংলা নাটকের বর্ণময় যাত্রাপথ।
নাট্যজগতের মানুষের আশা— এই রজতজয়ন্তী উৎসব নতুন প্রজন্মকে নাট্যমঞ্চের প্রতি আগ্রহী করবে এবং তৃপ্তি মিত্রের ‘অপরাজিতা’ প্রদর্শনী তাঁদের অনুপ্রাণিত করবে ভবিষ্যতের সৃজনশীল পথে।