
মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জ কাশীগঞ্জ বিবেক সংঘের এবারের দুর্গাপুজোয় ছিল এক অন্যরকম আবেদন। ২০২৫ সালের তাদের থিম ছিল— “মাটির টানে, মায়ের কাছে”, যেখানে প্রতিমা থেকে মণ্ডপসজ্জা পর্যন্ত সর্বত্র ফুটে উঠেছিল মাটির গন্ধ, ঐতিহ্যের ছোঁয়া ও পরিবেশবান্ধব ভাবনা।
দৈনন্দিন জীবনের ব্যবহৃত মাটির হাঁড়ি-পাতিল, প্রদীপ, কলসি, মানডা, এমনকি ভাঙা মাটির জিনিসপত্র দিয়েই গড়ে তোলা হয়েছিল এই পুজো মণ্ডপ। শিল্পীরা চমৎকার দক্ষতায় সেই সাধারণ উপকরণগুলোকেই শিল্পের উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছেন। মণ্ডপে প্রবেশ করলেই দর্শনার্থীরা যেন ফিরে যাচ্ছিলেন বাংলার গ্রামীণ শেকড়ের কাছে — যেখানে মাটি মানেই মা, মায়ের মানেই জীবনের উৎস।
এই সামাজিক ও সৃজনশীল উদ্যোগে একসাথে কাজ করেছেন ক্লাবের ছোট-বড় সকলে — আট থেকে আশি। তাঁদের অক্লান্ত পরিশ্রমে একেবারে হাতে তৈরি এক পরিবেশবান্ধব সৌন্দর্যের মণ্ডপ উপহার পেয়েছে জিয়াগঞ্জবাসী।
এই অনন্য উদ্যোগকেই স্বীকৃতি দিয়েছে জেলার তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর, বিবেক সংঘকে প্রদান করেছে “সেরা পরিবেশবান্ধব পুজো”-র তখমা। এখানেই শেষ নয় — ২০২৫-এর মধ্যবঙ্গের পুজো পরিক্রমায় বিবেক সংঘ ছিনিয়ে নিয়েছে গর্বের ক্লাসমেট ভেঞ্চারস আয়োজিত “মধ্যবঙ্গের সেরা পুজো – ২০২৫” পুরস্কারও। পুরস্কার প্রদান করতে ক্লাসমেট ভেঞ্চার এর তরফ থেকে উপস্থিত ছিলেন বিশাল বিশ্বাস, সৌরভ আম্বালি এবং সুবীর চৌধুরী।
চতুর্থী থেকে দশমী পর্যন্ত প্রতিদিন ভিড় জমেছে হাজারো মানুষের। উৎসবমুখর পরিবেশে আলো, গান, আনন্দ আর ভক্তির মেলবন্ধনে মুখর ছিল গোটা এলাকা। উদ্যোক্তাদের কথায়,
“আমরা ভীষণ আপ্লুত। সাধারণ মানুষের ভালোবাসা ও সাড়া পেয়ে আমাদের এই পরিশ্রম সার্থক হয়েছে। আগামী দিনেও এমন পরিবেশবান্ধব ও ঐতিহ্যনিষ্ঠ পুজোর ধারাকে আমরা বজায় রাখতে চাই।”