
জিয়াগঞ্জ, মুর্শিদাবাদ:
আলো, ভক্তি আর ঐতিহ্যের অনবদ্য মেলবন্ধনে সেজে উঠছে জিয়াগঞ্জ ভট্টপাড়া ঘোষপাড়া। স্থানীয় জাগরণী সংঘের উদ্যোগে এ বছর আয়োজিত শ্রীশ্রী কালীপুজোয় রয়েছে অভিনব থিম—বিড়লা রাধাকৃষ্ণ মন্দিরের আদলে তৈরি পুজো মণ্ডপ। থিনের শিল্পকলা আর দক্ষ কারিগরদের নৈপুণ্যে তৈরি এই মণ্ডপ ইতিমধ্যেই চর্চার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে জিয়াগঞ্জ–আজিমগঞ্জ জুড়ে।
উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, প্রতিবছরই এই পুজোয় হাজার হাজার মানুষের ভিড় উপচে পড়ে। বছরের এই বিশেষ দিনটিতে শুধুমাত্র জিয়াগঞ্জ নয়, আশপাশের গ্রামাঞ্চল থেকেও অসংখ্য দর্শনার্থী ভিড় জমান মায়ের দর্শনে। এবারের থিমে পবিত্রতা, শিল্প ও আধ্যাত্মিকতার এক অনন্য মেলবন্ধন ঘটানোর লক্ষ্য নিয়েই এগিয়েছে পুজো কমিটি।
দীপাবলির প্রথম দিন থেকেই জমে উঠবে এই পুজো প্রাঙ্গণ। রবিবার সন্ধ্যায় হবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, যেখানে মায়ের পুজোর শুভ সূচনা করবেন সারগাছি রামকৃষ্ণ মিশনের মহারাজ। উদ্বোধনের দিন থেকেই দর্শনার্থীদের জন্য থাকছে তিনদিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, যার মধ্যে থাকবে নৃত্য, সংগীত, আবৃত্তি, নাটকসহ নানা পরিবেশনা। স্থানীয় প্রতিভাবান শিল্পীদের পাশাপাশি বাইরের অতিথি শিল্পীরাও অংশ নেবেন এই উৎসবে।
পুজো উদ্যোক্তাদের এক সদস্য বলেন, “আমাদের এই পুজো শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি জিয়াগঞ্জের মানুষের মিলনমেলা। প্রতিবারই আমরা কিছু নতুন আনার চেষ্টা করি, যাতে ভক্ত ও দর্শনার্থীরা কিছু ভিন্ন স্বাদ পান।”
এ বছর পুজো প্রাঙ্গণে থাকবে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও স্বাস্থ্য সহায়তা কেন্দ্র। দর্শনার্থীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে স্থাপন করা হয়েছে আলাদা প্রবেশ ও প্রস্থান পথ, পাশাপাশি বিশ্রাম ও প্রসাদ বিতরণের বিশেষ ব্যবস্থা। উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কোনো রকম অতিরিক্ত টিকিট ছাড়াই সকলেই সানন্দে প্রবেশ করতে পারবেন পুজো প্রাঙ্গণে।
জাগরণী সংঘ প্রাঙ্গণে ইতিমধ্যেই চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। কর্মব্যস্ত শিল্পীদের হাতের ছোঁয়ায় প্রতিনিয়ত রূপ নিচ্ছে মণ্ডপের কাঠামো। সন্ধ্যা নামলেই আলোয় আলোকিত হয়ে উঠছে গোটা ঘোষপাড়া।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, প্রতি বছর যেমন এখানে ভক্ত ও দর্শনার্থীদের ঢল নামে, তেমনই এবারও ২০২৫-এর দীপাবলিতে আগের বছরের তুলনায় আরও বেশি জনসমাগমের আশা করা হচ্ছে।
সবমিলিয়ে, জিয়াগঞ্জ ভট্টপাড়া ঘোষপাড়া জাগরণী সংঘের এবারের কালীপুজো শুধুমাত্র এক ধর্মীয় উৎসব নয়, বরং সমগ্র অঞ্চলের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও ঐক্যের প্রতীক হয়ে উঠতে চলেছে বলেই মনে করছেন স্থানীয়রা।