আমার চোখে মুম্বাই

Spread the love


——-অমর নস্কর
মুম্বাই শহরে বহুতলের পাশে
ইংরেজ আমলের নিদর্শন টালি ছাওয়া
ধর্মশালা, জৈন, শিখ, পারসিক
যেন আগলে আছে ওড়ালপোল
আর আকাশচুম্বি বহুতলে ঘেরা।
ঘনঘন চৌমাথা—ভিড়ে ঠাসা পথ
গাড়ি চলে ট্যাক্সি আর সরকারি বাস
মিটারে যা তাই ভাড়া ট্যাক্সি—বাসে প্রথমে
পাঁচ টাকা ভাড়া। দোতলা বাস রয়েছে। বাসে উঠে নামতে হবে সামনের সিঁড়ি দিয়ে। কলকাতার মতো সরকারি বাস ঢডঢড়ে নয়। সুন্দর । মনে হবে যেন নতুন বাস। কনট্র্যাক্টর সরকারি পোষাক পরিহিত হাতে টিকিটের মেসিন। কিউআর কোডে ভাড়া নেয় ৫টাঃ থেকে শুরু। শহরে অটো নেই। নোংরা ভ্যাট ছাড়া নোংরা নেই। বাজার পরিষ্কার। বস্তি শহরের শেষে হয়ত দেখিনি। ঠকানোর কোন গ্যাঙ দেখিনি। ধর্মপ্রাণ মানুষ। মন্দির মসজিদ রয়েছে। মসজিদের জন্য রাস্তা দুভাগও দেখেছি। রাস্তায় কাজ হচ্ছে ঘিরে রেখে। মন্দিরের পাশে গরু । তাকে খাওয়ানোর জন্য কিছু বয়স্কারা তুঁষের গোল্লা পাকিয়ে রাখে। টাকা দিয়ে সেই গোল্লা গরুরমুখে দিয়ে পুন্যি করে মানুষ। মুসলমানদের রোজা ভাঙা এবং বড়ো দোকানের সামনে খাবারের স্টল অভিনব। ট্যাক্সি হাত বাড়ালেই। কোন অসৎ অভিপ্রায় দেখিনি। কলকাতায় নতুন লোক দেখলে ঠকানোর একটা প্রতিযোগিতা শুরু হয়। এখানে উল্টো।
সাজানো দোকানপাঠ, বড় বড় হোটেল
রেস্তোরাঁ —আর সরকারি অফিস-আদালত।
লম্বা খেলারমাঠ। আরবসাগরের প্রান্তজুড়ে
ইন্ডিয়াগেট। লোকাল ট্রেনে ভীড়।
প্রতিটি স্টেশনে চলমান সিঁড়ি, লিফ্ট ছিমছাম।
হকারমুক্ত সর্বত্র। গাছপালা তেমন চোখে পরল না। মোড়গুলোতে রেলি়ংঘেরায় গাছ অবশ্য রয়েছে।
শিয়ালদহ স্টেশনের মতো এখানে কোন স্টেশনে
বাড়তি ঝামেলা নেই। মানে মফঃস্বলের কা৺চা আনাজ বিক্রির দৌরাত্ম। ট্রেনে অফিসযাত্রীই বেশি। দুপুরে ফা৺কা থাকে। ভীড়ের ঠেলায় পিছিয়ে গিয়ে গন্তব্য স্টেশনে আস্তে হয়েছে। ঘনঘন গাড়ি। পার্ক সাজানো। ভোটের কোন উন্মাদনা দেখলাম না। ফেষ্টুন শুধু ঝুলছে। মনোরেল চলে। আকাশ চুম্বি অট্টালিকা এখানে যেন অভিভাবকের মতো পাহারায়। আর একটা কথা। শহরের পৌর হাসপাতাল পরিষেবা আমার কলকাতা বাসি বলতে লজ্জা হয়। কি নিখুঁত পরিষেবা। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। রোগীদের বেড নার্সিংহোমের মতো টপটপ। আমার নিজস্ব অভিজ্ঞতা বলি। আমার কন্ঠ ফুটো করে টেক্সটোটমী পাইপ লাগানো ছিল বায়প্সি হয়েছে। কলকাতা থেকে যাবার সময় খুলে যায়। খুব কষ্ট পাচ্ছিলাম। টাটা হাসপাতালে টিকিট হলনা। দেরির জন্য। ঐ কে সি হাসপাতালে যেতেই ইমার্জেন্সী তে আমার পাইপ লাগিয়ে দিল নতুন। কোন টাকা লাগল না। আমি অভিভূত। মুম্বাইতে মানুষের ভালোবাসা অসীম। টাটা হাসপাতালের পাশে রাস্তায় শুয়ে কত রোগী চিকিৎসা নেয়। তাদেরকে খাবার দেয় অনেক এনজিও।
কর্মক্ষেত্র এখানে সব সময় গতিময়।
—রাজহংস
ভিট্টলবাড়ি, থানে, মহারাষ্ট্র।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *