
নিজস্ব প্রতিবেদন, জিয়াগঞ্জ:
চাকরির বাজারে যখন মন্দার ছায়া ক্রমশ ঘনাচ্ছে, তখন বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের আশায় এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করল জিয়াগঞ্জের একটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান—কেয়ার অ্যাকাডেমি। শুক্রবার জিয়াগঞ্জ কমার্স কলেজ সংলগ্ন প্রাঙ্গণে আয়োজিত হল কেয়ার অ্যাকাডেমির উদ্যোগে প্রথম বর্ষ চাকরি মেলা।
এই মেলায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত অসংখ্য বেকার যুবক ও যুবতী। সকাল থেকেই চোখে পড়ে লম্বা লাইন—ফাইল হাতে, কাঁধে ব্যাগ নিয়ে প্রত্যেকে যেন আশায় বুক বাঁধা একজন সৈনিক। প্রতীক্ষায় তারা, যদি আজকের দিন বদলে দিতে পারে আগামীকাল।
চাকরি মেলায় অংশগ্রহণকারী সংস্থার তালিকাও ছিল উল্লেখযোগ্য। অ্যাক্সিস ব্যাঙ্ক, এসবিআই কার্ড, ফ্লিপকার্ট, পাইন ল্যাবস, উৎকর্ষ ফাইন্যান্স ব্যাংক, এল অ্যান্ড টি ফাইন্যান্স, ম্যাক্স লাইফ ইনস্যুরেন্স, ভারত ফাইন্যান্স সহ ২০টিরও বেশি সংস্থার প্রতিনিধি এদিন উপস্থিত ছিলেন। জানা গিয়েছে, এই চাকরি মেলা থেকে প্রায় ৭৫ জন যুবক-যুবতীকে প্রাথমিকভাবে বাছাই করা হয়েছে, যাঁদের আগামী দিনে বিভিন্ন সংস্থায় চাকরির সুযোগ দেওয়া হবে।
এই কর্মমেলাকে ঘিরে প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গণে তৈরি হয় এক উৎসবমুখর পরিবেশ। অনেকেই বলছেন, জিয়াগঞ্জে এই প্রথমবার এত বড় আকারে একটি চাকরি মেলা অনুষ্ঠিত হল। কেয়ার অ্যাকাডেমির তরফে জানানো হয়েছে, এটি তাদের প্রথম উদ্যোগ হলেও ভবিষ্যতে নিয়মিতভাবে এই ধরনের মেলা আয়োজন করার পরিকল্পনা রয়েছে।
অ্যাকাডেমির এক শিক্ষক বলেন, “বর্তমান সময়ে আমাদের যুব সমাজ সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছে কর্মসংস্থানের অভাবে। আমরা চাই, তাদের পাশে দাঁড়াতে, তাদের নতুন সুযোগ এনে দিতে। এই উদ্যোগ সেই লক্ষ্যেরই একটি ছোট্ট পদক্ষেপ।”
অংশগ্রহণকারী এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, “আমি বহরমপুর থেকে এসেছি। আজকের এই চাকরি মেলা আমাদের জন্য এক আশার আলো। এমন প্ল্যাটফর্ম খুব একটা পাওয়া যায় না। আশা করি এর থেকে একটা ভালো ফল পাব।”
চাকরির জন্য মরিয়া বহু তরুণ-তরুণীর মুখে ফুটে উঠেছিল আশার ঝলক। কেউ এসেছেন প্রথমবার, কেউ বা আগেও বিভিন্ন জায়গায় ইন্টারভিউ দিয়েছেন। কিন্তু সবার মুখে ছিল একটাই কথা—“এই সুযোগটা হাতছাড়া করা যাবে না।”
জিয়াগঞ্জ কেয়ার অ্যাকাডেমির এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকার বিশিষ্টজনেরা, অভিভাবক মহল ও সমাজকর্মীরা। তাদের মতে, এই ধরনের পদক্ষেপ শুধু কর্মসংস্থানই নয়, সমাজের সচেতনতার প্রতিফলনও।
আজকের এই ছোট্ট উদ্যোগ হয়তো কাল বদলে দিতে পারে কোনও পরিবারের ভবিষ্যৎ। বেকারত্বের অন্ধকারে এমন এক আলোর দিশা সত্যিই প্রশংসনীয়। সময়ই বলবে, এই চাকরি মেলা কতটা সার্থক হয়েছে। তবে বর্তমান বাস্তবতায় কেয়ার অ্যাকাডেমির এই প্রয়াস নিঃসন্দেহে যুগান্তকারী।
জিয়াগঞ্জ থেকে সৌরভ আম্বলীর রিপোর্ট