
প্রতিবছরের ন্যায় এবছর ২০ শে জুন বৃহস্পতিবার ২০২৪ পানিহাটির চিড়াদধি দন্ড মহোৎসব মহাসমারোহে যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদার সঙ্গে পালন করা হবে। ইসকনের প্রধান কেন্দ্র শ্রীধাম মায়াপুরসহ বিশ্বব্যাপী সমস্ত শাখাকেন্দ্রে এই উৎসব পালন করা হবে। সবচেয়ে বড় উল্লেখযোগ্য চিড়াদধি দন্ড মহোৎসব পালিত হবে আমেরিকার আটলান্টা শাখাকেন্দ্রে।ইসকন পানিহাটির শ্রী শ্রী গৌরনিতাই মন্দিরে ১৬ ই জুন ২০২৪ থেকে ২০ শে জুন ২০২৪ এই ৫ দিন ব্যাপী চিড়া-দধি দন্ড মহোৎসব বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালন করা হবে।
এই দন্ড (শাস্তি) দিয়েছিলেন শ্রীমন্ নিত্যানন্দ প্রভু ১৫১৪ খ্রিস্টাব্দে তথা ৯২১ বঙ্গাব্দে বিশ লক্ষ স্বর্ণ মুদ্রা মাসিক আয় সমন্বিত হুগলি জেলার অন্তর্গত শ্রীকৃষ্ণপুরের জমিদার শ্রী গোবর্ধন মজুমদারের একমাত্র পুত্র শ্রীচৈতন্যপার্ষদ শ্রী রঘুনাথ দাস গোস্বামীকে।দন্ডটি ছিল শ্রী শ্রী নিত্যানন্দ-গৌরাঙ্গের ভক্তবৃন্দকে চিড়া-দধি ভোজন করানো।কোন অপরাধে,কেন দন্ড দিয়েছিলেন? অপরাধটি ছিল শ্রী নিত্যানন্দ প্রভুর আর্শীবাদ না নিয়ে রঘুনাথ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর কৃপা লাভ করার প্রয়াস করেছিলেন।অত্যন্ত আনন্দের সহিত তিনি এই দন্ড গ্রহণ করেছিলেন। আজ থেকে ৫০৮ বৎসর পূর্বে বিশাল সমারোহে রঘুনাথ “চিড়া-দধি” মহোৎসবের আয়োজন করেছিলেন। তখন শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু সন্ন্যাসীবেশে পুরীধামে অবস্থান করলেও নিত্যানন্দ প্রভুর আহ্বানে এই অপ্রাকৃত মহোৎসবে তাঁর দিব্য স্বরূপে যোগদান করে নিত্যানন্দ প্রভুর শ্রীহস্ত থেকে ভোগ গ্রহণ করেছিলেন। শ্রী রঘুনাথ দাস লক্ষ লক্ষ ভক্তমন্ডলীকে “চিড়া-দধি” প্রসাদ বিতরণ করেছিলেন। কয়েকজন পার্ষদ ব্যাতীত শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর এই দিব্যলীলা অন্যেরা দর্শনের সৌভাগ্য লাভ করতে পারেননি। সেই ঐতিহ্য স্মরণ করে প্রতিবছর জৈষ্ঠ্য শুক্লা ত্রয়োদশীতে গ্রীষ্মের প্রচন্ড দাবদাহে গঙ্গাতটে বিশাল বটবৃক্ষের স্নিগ্ধ সুশীতল ছায়ায় আজও এই উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই উৎসব স্তিমিত করে দেয় হিংসা – দ্বেষ এর বাতাবরণকে, আবদ্ধ করে দেয় শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর প্রেম-শৃঙ্খলে।জাতি,ধর্ম,বর্ণ নির্বিশেষে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লক্ষ লক্ষ মানবের মিলন ক্ষেত্র,মিলন মেলা এই উৎসব।এইদিন সমগ্র বিশ্বে ইসকনের প্রতিটি শাখা কেন্দ্রে এই “পানিহাটি দন্ড মহোৎসব” মহাসমারোহে উদযাপিত হবে। শ্রীধাম মায়াপুরে পতীত পাবনী গঙ্গা মন্দিরে মহাসমারোহে যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদার সঙ্গে এই উৎসব পালন করা হবে।